|| রিভিউ ||
বই – রক্তবীজ
মূল – পিটার ট্রিমেন
রূপান্তর – খসরু চৌধুরী
প্রকাশক – সেবা প্রকাশনী
প্রকাশকাল – ১৯৮৩ (ভলিউম আকারে – ২০১৫)
ঘরানা – হরর/থ্রিলার
মূল্য – ৮৬ টাকা (ট্রেজার আইল্যান্ড + রক্তবীজ + স্যামসন-ডেলায়লা একত্রে)
রিভিউ লিখেছেন – শুভাগত দীপ
বিশ্বখ্যাত লেখক ব্রাম স্টোকারের সেরা সৃষ্টি ‘ড্রাকুলা’র বিপুল পাঠকপ্রিয়তার কথা কারো অজানা নেই। এই হরর উপন্যাসটি বিক্রি হয়েছে কয়েক মিলিয়ন কপি। এখনো, এই আজকের দিনেও ‘ড্রাকুলা’র জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। পিটার ট্রিমেনের ‘রক্তবীজ’ মূলত ‘ড্রাকুলা’র প্রিক্যুয়েল। কুখ্যাত কাউন্ট ড্রাকুলার কনিষ্ঠ পুত্র স্বয়ং মিচেলিনোর জবানীতে বর্ণিত হয়েছে এর কাহিনি।
রোমে বসবাসরত ব্যারন মিচেলিনো সেখানে জড়িয়ে পড়ে অনাহূত এক ঝামেলায়। সেখানে বসবাস করা তার পক্ষে একরকম অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। পালাজো ছেড়ে বাইরে কোথাও চলে যাওয়ার তাগিদ অনুভব করে সে। ঠিক এই সময়েই আসে সেই রহস্যময় চিঠিটা। ওয়ালাচিয়ার ক্যাসল ড্রাকুলা থেকে তার বৈমাত্রেয় দুই ভাই ভ্লাড টেপিলাস ও মিহাইল দ্য ব্যাড চিঠি লিখে তাকে ক্যাসলে আসার আমন্ত্রণ জানায়। স্মরণ করিয়ে দেয়, মিচেলিনো ওরফে মার্সিয়া নিজেও একজন ড্রাকুলা। কাউন্ট ড্রাকুলার রক্ত বইছে তার শিরায়। এদিকে পালাজোর বিরূপ পরিস্থিতি ওকে জায়গাটা ছাড়তে প্ররোচিত করছিলো বারবার। তার সে ওয়ালাচিয়ার ড্রাকুলা ক্যাসলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যে ক্যাসল তার মা আর সে ত্যাগ করেছিলো অনেক বছর আগে।
দীর্ঘ যাত্রাপথে মিচেলিনো যেমন অনেক মানুষের সাথে পরিচিত হলো, তেমনই ঘটতে দেখলো অনেক ব্যাখ্যাতীত ঘটনা। ওয়ালাচিয়ার আশেপাশের এলাকাগুলোর বসবাসকারীরা যেন কিসের একটা আতঙ্কে দিন কাটায়। প্রত্যেকের বাড়ির জানালা দরজায় ঝোলানো থাকে রসুনের মালা। রাত হলেই মৃত্যুপুরীর নিস্তব্ধতা নেমে আসে সেসব এলাকায়। আন-ডেড, মরই – এসব শব্দ লোকের মুখে শুনে শুনে আগ্রহী হয়ে উঠলো মিচেলিনো। তারপর যখন ক্যাসল ড্রাকুলায় পৌঁছালো, আরো রহস্যের দেখা পেলো। ভ্লাড আর মিহাইল যেন অদ্ভুত আচরণ করছে। ভৃত্য হয়েও নিজের অধিকারের সীমা ছাড়াচ্ছে ট্রিগসর। দিনের আলোয় শ্মশান হয়ে থাকছে ক্যাসল, জেগে উঠছে রাতে। তাহলে কি মানুষ যা বলে সব ঠিক? ক্যাসল ড্রাকুলা কি আসলেই অভিশপ্ত? আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে প্রশ্ন, মিচেলিনোর বাবা কাউন্ট ড্রাকুলা কি আসলেই মারা গেছেন? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বন্ধু সেন্ট জনকে নিয়ে আটঘাট বেঁধে লাগলো মিচেলিনো। আর ঠিক তখনই যেন নরকের দরজা খুলে গেলো তাদের সামনে।
অভিজাত মানুষ ভ্লাড তেপস এর কুখ্যাত কাউন্ট ড্রাকুলায় রূপান্তরিত হয়ে ওঠার গল্প শুনিয়েছেন লেখক পিটার ট্রিমেন। সে সময়কার ইতিহাস, যুদ্ধ, ড্রাকুলা পরিবারের নানা উত্থানপতন, তাদের আধিপত্য বিস্তার এসব। বিষয় বেশ নিপুণভাবে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন তিনি। কাহিনির শুরুতে ড্রাকুলা পরিবারের একটা বংশলতিকাও দেয়া হয়েছে পাঠকের সুবিধার জন্য। বংশলতিকাটা অনেক সাহায্য করেছে।
‘Blood against blood’ কথাটির সত্যতা পাওয়া যায় ‘রক্তবীজ’ পড়লে। মিচেলিনো ওরফে মার্সিয়া, যে কিনা নিজেও একজন ড্রাকুলা ও ড্রাকুলা পরিবারের অন্যান্যদের মধ্যকার দ্বৈরথ বেশ স্পষ্টভাবেই ধরা দেবে পাঠকের চোখে।
শেষের দিকে হয়তো লেখকের নিজের অজান্তেই কাহিনিটা একটু দুর্বল হয়ে পড়েছিলো। এটা অবশ্য একান্তই আমার নিজস্ব মতামত। তা ছাড়া দারুন উপভোগ্য লেগেছে পুরো কাহিনিটা। সেবার একসময়ের নিয়মিত ও জনপ্রিয় অনুবাদক খসরু চৌধুরীর সাবলীল অনুবাদ কাহিনিকে করে তুলেছে আরো আকর্ষনীয়। যারা পড়েননি, পড়ে ফেলতে পারেন।
আমার রেটিং – ৮/১০
(পিডিএফ চাইবেননা। ভলিউমটা নতুন। বাজারে অ্যাভেইলেবল।)
ফরম্যাটঃPDF পিডিএফ বই
সৌজন্যেঃFree bangla pdf books ডাউনলোড
রেজুলেশনঃ ৬০০ DPI
বইয়ের ট্যাগঃ
বই – রক্তবীজ
মূল – পিটার ট্রিমেন
রূপান্তর – খসরু চৌধুরী
প্রকাশক – সেবা প্রকাশনী
প্রকাশকাল – ১৯৮৩ (ভলিউম আকারে – ২০১৫)
ঘরানা – হরর/থ্রিলার
মূল্য – ৮৬ টাকা (ট্রেজার আইল্যান্ড + রক্তবীজ + স্যামসন-ডেলায়লা একত্রে)
রিভিউ লিখেছেন – শুভাগত দীপ
বিশ্বখ্যাত লেখক ব্রাম স্টোকারের সেরা সৃষ্টি ‘ড্রাকুলা’র বিপুল পাঠকপ্রিয়তার কথা কারো অজানা নেই। এই হরর উপন্যাসটি বিক্রি হয়েছে কয়েক মিলিয়ন কপি। এখনো, এই আজকের দিনেও ‘ড্রাকুলা’র জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। পিটার ট্রিমেনের ‘রক্তবীজ’ মূলত ‘ড্রাকুলা’র প্রিক্যুয়েল। কুখ্যাত কাউন্ট ড্রাকুলার কনিষ্ঠ পুত্র স্বয়ং মিচেলিনোর জবানীতে বর্ণিত হয়েছে এর কাহিনি।
রোমে বসবাসরত ব্যারন মিচেলিনো সেখানে জড়িয়ে পড়ে অনাহূত এক ঝামেলায়। সেখানে বসবাস করা তার পক্ষে একরকম অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। পালাজো ছেড়ে বাইরে কোথাও চলে যাওয়ার তাগিদ অনুভব করে সে। ঠিক এই সময়েই আসে সেই রহস্যময় চিঠিটা। ওয়ালাচিয়ার ক্যাসল ড্রাকুলা থেকে তার বৈমাত্রেয় দুই ভাই ভ্লাড টেপিলাস ও মিহাইল দ্য ব্যাড চিঠি লিখে তাকে ক্যাসলে আসার আমন্ত্রণ জানায়। স্মরণ করিয়ে দেয়, মিচেলিনো ওরফে মার্সিয়া নিজেও একজন ড্রাকুলা। কাউন্ট ড্রাকুলার রক্ত বইছে তার শিরায়। এদিকে পালাজোর বিরূপ পরিস্থিতি ওকে জায়গাটা ছাড়তে প্ররোচিত করছিলো বারবার। তার সে ওয়ালাচিয়ার ড্রাকুলা ক্যাসলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যে ক্যাসল তার মা আর সে ত্যাগ করেছিলো অনেক বছর আগে।
দীর্ঘ যাত্রাপথে মিচেলিনো যেমন অনেক মানুষের সাথে পরিচিত হলো, তেমনই ঘটতে দেখলো অনেক ব্যাখ্যাতীত ঘটনা। ওয়ালাচিয়ার আশেপাশের এলাকাগুলোর বসবাসকারীরা যেন কিসের একটা আতঙ্কে দিন কাটায়। প্রত্যেকের বাড়ির জানালা দরজায় ঝোলানো থাকে রসুনের মালা। রাত হলেই মৃত্যুপুরীর নিস্তব্ধতা নেমে আসে সেসব এলাকায়। আন-ডেড, মরই – এসব শব্দ লোকের মুখে শুনে শুনে আগ্রহী হয়ে উঠলো মিচেলিনো। তারপর যখন ক্যাসল ড্রাকুলায় পৌঁছালো, আরো রহস্যের দেখা পেলো। ভ্লাড আর মিহাইল যেন অদ্ভুত আচরণ করছে। ভৃত্য হয়েও নিজের অধিকারের সীমা ছাড়াচ্ছে ট্রিগসর। দিনের আলোয় শ্মশান হয়ে থাকছে ক্যাসল, জেগে উঠছে রাতে। তাহলে কি মানুষ যা বলে সব ঠিক? ক্যাসল ড্রাকুলা কি আসলেই অভিশপ্ত? আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে প্রশ্ন, মিচেলিনোর বাবা কাউন্ট ড্রাকুলা কি আসলেই মারা গেছেন? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বন্ধু সেন্ট জনকে নিয়ে আটঘাট বেঁধে লাগলো মিচেলিনো। আর ঠিক তখনই যেন নরকের দরজা খুলে গেলো তাদের সামনে।
অভিজাত মানুষ ভ্লাড তেপস এর কুখ্যাত কাউন্ট ড্রাকুলায় রূপান্তরিত হয়ে ওঠার গল্প শুনিয়েছেন লেখক পিটার ট্রিমেন। সে সময়কার ইতিহাস, যুদ্ধ, ড্রাকুলা পরিবারের নানা উত্থানপতন, তাদের আধিপত্য বিস্তার এসব। বিষয় বেশ নিপুণভাবে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন তিনি। কাহিনির শুরুতে ড্রাকুলা পরিবারের একটা বংশলতিকাও দেয়া হয়েছে পাঠকের সুবিধার জন্য। বংশলতিকাটা অনেক সাহায্য করেছে।
‘Blood against blood’ কথাটির সত্যতা পাওয়া যায় ‘রক্তবীজ’ পড়লে। মিচেলিনো ওরফে মার্সিয়া, যে কিনা নিজেও একজন ড্রাকুলা ও ড্রাকুলা পরিবারের অন্যান্যদের মধ্যকার দ্বৈরথ বেশ স্পষ্টভাবেই ধরা দেবে পাঠকের চোখে।
শেষের দিকে হয়তো লেখকের নিজের অজান্তেই কাহিনিটা একটু দুর্বল হয়ে পড়েছিলো। এটা অবশ্য একান্তই আমার নিজস্ব মতামত। তা ছাড়া দারুন উপভোগ্য লেগেছে পুরো কাহিনিটা। সেবার একসময়ের নিয়মিত ও জনপ্রিয় অনুবাদক খসরু চৌধুরীর সাবলীল অনুবাদ কাহিনিকে করে তুলেছে আরো আকর্ষনীয়। যারা পড়েননি, পড়ে ফেলতে পারেন।
আমার রেটিং – ৮/১০
(পিডিএফ চাইবেননা। ভলিউমটা নতুন। বাজারে অ্যাভেইলেবল।)
ফরম্যাটঃPDF পিডিএফ বই
সৌজন্যেঃFree bangla pdf books ডাউনলোড
রেজুলেশনঃ ৬০০ DPI
অথবা
বইয়ের ট্যাগঃ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন